ভগবান শ্রী-কৃষ্ণের বানী

0

                                         ভগবান শ্রী-কৃষ্ণের বানী




যখন নিজের কোন ভাল কাজের বদলে দুঃখ লাভ হয়, অথবা কেউ দুঃকর্ম করেও সুখ লাভ করে, তাহলে মন অবশ্যই এ ভাবতে বসে জে তাহলে ভাল কাজ করার ধর্মের পথে চলার তাৎপর্যটা কি?
কিন্তু দুরাত্বাকে কি ভোগ করতে হয় সেটাও দেখুন।
দুঃস্কর্ম জে করে তার মন সর্বদা চন্চল থাকে, ব্যাকুল হতে থাকে, মনে সর্বদা নতুন নতুন সংঘর্ষ উৎপন্ন হয়।
অবিশ্বাস তাকে সারাজীবন ছোটাতে থাকে, একে কি সুখ বলে? জে ব্যাক্তি ধর্মের পথে চলে সর্বদা সুকর্মে লিপ্ত থাকে। সৎ চরিত্রের অধিকারী হৃদয় সর্বদা শান্ত থাকে।
পরিস্হিতি তার জীবনের সুখের বাধা হয়ে দ্বারায় না।
সমাজে তার সন্মান আর মনের সন্তোষ অক্ষ্যাত থাকে সর্বদা।
অর্থাৎ ভালো ব্যাবহার ভবিষ্যতে সুখের পথ দেখায় না, ভালো ব্যাবহার নিজেই সুখ দেয়।
অপরদিকে দূর্ব্যাবহার ভবিষ্যতে দুঃখের পথ দেখায় না, অধর্ম সেই মুহুর্তে দুঃখকে উৎপন্ন করে।
ধর্ম থেকে সুখ পাওয়া জায় না, ধর্মই স্বংয়ং সুখ।

যা হয়েছে তা ভালই হয়েছে
যা হচ্ছে তা ভালই হচ্ছে।
যা হবে তা ভালই হবে।
তোমার কি হারিয়েছে - যে তুমি কাঁদছ ?
তুমি কি নিয়ে এসেছিলে - যে তুমি হারিয়েছো?
তুমি কি সৃষ্টি করেছ - যা নষ্ট হয়ে গেছে?
তুমি যা কিছু নিয়েছ - এখান থেকেই নিয়েছ।
যা দিয়েছ - এখানেই দিয়েছ।
তোমার আজ যা আছে,
কাল তা অন্য কারো ছিল।
পরশু সেটা অন্য কারো হয়ে যাবে।
পরিবর্তনই সংসারের নিয়ম।
-------- গীতা সারাংশ

বিরোধিতা শক্তির প্রমান হয় না। শক্তিমান সেই যে সহনশীল, সহ্য করতে পারে। যখন হৃদয় থেকে ক্রোধ আর বিরোধিতা দূর হয়ে জায় তখন সহনশক্তি ধর্মের শক্তিতে পরিনত হয়। ক্রোধ থেকে প্রতিশোধের জন্ম হয় আর ধর্ম থেকে ন্যায় জন্মায়। তোমার জিবনেও যদি এমন সময় আসে যখন তোমার উপর কোন অন্যায় হয় তবে ন্যায় করার পূর্বে নিজের ক্রোধের উপর অঙ্কুশ অবশ্যই রেখো।


যে বৃক্ষ তিক্তফল দান করে সে বৃক্ষকে উৎপাটন করে মধুর ফল প্রদানকারী বৃক্ষকে রোপন করতে হয়।
ওই বৃক্ষকেই অধিক খাদ্য গ্রহন করিয়ে বা শাখা প্রশাখাকে কাট ছাট করলে মধুর ফল পাওয়া জায় না।
ভবিষ্যৎকে শুদ্ধ করার জন্য এই অশুদ্ধ বর্তমানকে ধ্বংস করা অনিবার্য।
ভবিষ্যতের উদীয়মান সূর্যের প্রথম কিরনকে দেখো। যা সবার জন্য প্রতিক্ষা করছে।


অধিকতর আত্মা নিজের দেহকেই সব কিছু বলে গণ্য করে, সয়ং দেহ থেকে যে ভিন্ন তা জানতেই পারে না শরীরের যে দুঃখ, সুখ, স্বাদ। গন্ধ আদির অনুভব হয় তাকেই নিজের অনুভব মেনে নেয়, আর পরিবর্তনের প্রয়াসই করে না।
যে আত্মা পরিবর্তনের প্রচেষ্টাই করে না, নিরন্তর অধর্ম করে চলে তাকে জাগ্রত করার জন্য দণ্ড দেয়া অনিবার্য।
তুমিও এটা জেনে নাও যে তুমিও কোন শরীর নও,কেবল মাত্র এক আত্মা।
এই পৃথিবীতে পরিলক্ষিত সকল মানুষ তা নয় যা তুমি ওদের গণ্য করছ, কিছু সময়ের জন্য এরা শরীরে বসবাস করছে মাত্র।
এদের শরীরের মৃত্যু হবে কিন্তু এরা সবাই অমর।
সে পুনরায় নতুন শরীর ধারন করবে।

🔯ওমঃ সহানাভবাতু
ঈশ্বর আমাদের রক্ষা করুন।
🔯সহানুভুনক্তু
আমরা সবাই মিলে সুখ ভোগ করবো।
🔯সহবিরইয়ংকরবাবহে
একে অপরের লাভ হেতু প্রয়াস করবো।
🔯তেজাশ্রীমাবধীতমস্তু
আমাদের সবার জীবন তেজ দ্বারা পূর্ণ হোক।
🔯মাবিদ্বিসাবহে
পরস্পরের প্রতি কোন দ্বেশ বা ঈর্ষা না থাকে।
ওমঃ শান্তি
ওমঃ শান্তি
ওমঃ শান্তি

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বানি ভক্তের জন্যই ভগবান


প্রেম উন্নতি দেয়,
উচিৎ অনুচিতের জ্ঞান দেয়।
প্রেম আর মোহর মাঝে পার্থক্য থাকে-
বাস্তবে যা প্রেম, তা কোন মোহ নয়।
প্রেমের জন্ম করুণা থেকে হয়
আর মোহের জন্ম অহংকার থেকে।
প্রেম মুক্ত দেয়, মোহ আবদ্ধ করে।
প্রেম ধর্ম, আর মোহ অধর্ম।

নির্নয় নেয়ার মুহুর্তে আমরা সর্বদা কোন অন্য ব্যক্তির উপদেশ,সুচনা মঞ্চনা বা পরামর্শকে আধার করে থাকি।
আর আমাদের ভবিষ্যতের আধার হয়ে থাকে আমাদের আজকের নেয়া সিদ্ধান্ত।
তাহলে কি আমাদের ভবিষ্যৎ অন্য ব্যাক্তির পরামর্শ,কোন অন্য ব্যাক্তির দেয়া উপদেশের ফল?
তবে কি আমাদের সম্পূর্ণ জীবন কোন অন্য ব্যাক্তির বুদ্ধির পরিনাম?
আমরা কি কখনও বিচার করেছি?
সবাই জানে যে ভিন্ন ভিন্ন লোক একই পরিস্হিতে ভিন্ন ভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকে।
মন্দিরে দাড়ানো ভক্ত বলে দান করা উচিৎ। আর চোর বলে জদি সুযোগ পাওয়া যায় তবে ঐ মুর্তির গয়না চুরি করা উচিৎ।
ধার্মিক হৃদয় ধার্মিক উপদেশ দিয়ে থাকে আর অধর্মভড়া হৃদয় অর্ধামিক পরামর্শ দেয়।
এই ধর্মময় উপদেশ পরামর্শ স্বীকার করলে মানুষ সুখের দিকে জায়। কিন্ত এইরকম পরামর্শ স্বীকার করা তখনই সম্ভব হয় যখন হৃদয়ে ধর্ম থাকে।
অর্থাৎ কোন অন্য ব্যাক্তির উপদেশ বা পরামর্শ স্বীকার করার আগে স্বংয়ং নিজের হৃদয়ে ধর্মকে স্হাপন করা কি অনেক বেশি জরুরী নয়?
স্বংয়ং বিচার করুন


ভগবান শ্রী-কৃষ্ণের বানী

মানুষের সব সম্পর্কের আধার হল প্রত্যাশা।
পতি কেমন হবে - জে আমার জীবন সুখ আর সুবিধায় ভড়ে দেবে।
পত্নী কেমন হবে - জে সর্বদা আমার প্রতি সমর্পিত থাকবে।
সন্তান কেমন হবে - জে আমার সেবা করবে, আমার আদেশ মেনে চলবে।
মানুষ প্রেম তাকেই দিতে পারে, জে তার প্রত্যাশা পুরন করতে পারে।
আর প্রত্যাশার নিয়তিই হচ্ছে ভঙ্গ হওয়া।
কিভাবে?
কারন - প্রত্যাশা মানুষের মস্তিস্কে জন্ম নেয়, কোন অন্য ব্যাক্তি তার প্রত্যাশার কথা জানতেই পারে না।
পুর্ণ করার প্রবল ইচ্ছা থাকলেও কোন মানুষ কারর সকল প্রত্যাশা পূর্ণ করতে পারে না।
আর তার থেকেই জন্ম নেয় সংর্ঘর্স।
সকল সম্পর্ক সংর্ঘর্সে পরিবর্তিত হয়ে জায়।
কিন্তু মানুষ জদি প্রত্যাশাকে সম্পর্কের আধার না বানায়, আর স্বীকার করে জে কেবল সম্পর্কই মুল আধার।
তবে কি জীবন আপনা থেকেই সুখ আর শান্তিতে ভড়ে জাবে না?
স্বংয়ং বিচার করে দেখুন।

যখনই মানুষের জীবনে কোন বিরূপ পরিস্হিতি আসে মনুষ তখনই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে।
ঈশ্বরের সম্মুখে মিনতি করে জেন সে পরিস্হিতি থেকে নিস্তার পায়।
কিন্তু এই প্রর্থনার বাস্তবিকররূপ ক্যামন হয়?
সেটা কি আমরা কখনও বিবেচনা করেছি?
প্রার্থনার অর্থ হল নিজের সমস্ত আকাঙ্খা, সমস্ত চিন্তা, সমস্ত সংকল্প, সমস্ত পরিকল্পনা ঈশ্বরের চরনে দান করা।
অর্থাৎ নিজের কর্মের ফল কি হবে সেই নিয়ে চিন্তা না করে ধর্মের অনুরূপ কর্ম করা।
ঈশ্বরের পরিকল্পনাকেই নিয়তি বলে মেনে নেয়া।
সেটাই তো প্রার্থনা, তাই না?
কিন্তু ঈশ্বরের সমস্ত পরিকল্পনা বোঝাটাটা সম্ভব কি?
সেসব পরিকল্পনা তো আমাদের কর্মের পরিনামস্বরূপ প্রকাশ পায় সর্বদা।
কিন্তু জদি কেউ সবকর্মকেই ত্যাগ করে, সেটা কি প্রকৃত প্রার্থনা?
বাস্তবে কর্মই জীবন আর ফলের প্রতি মোহ না করাই সত্যিকারের প্রার্থনা।
জে প্রার্থনা কর্মের পথে বাধা হয়ে দাড়ায়, মানুষকে কার্যই করতে না দেয়, সেটা প্রার্থনা না পরাজয়?
স্বংয়ং বিচার করুন।

ধর্ম কী ?
ধর্ম। ধর্মের বিষয়ে সবাই চিন্তা করে। কেউ নিজের ধর্মের বিষয়ে আবার কেউ অন্যের ধর্মের ব্যাপারে। কারো অধর্মের বিষয়ে আলোচনা হতেই থাকে। এমন কেউ নেই যে ধর্মের বিষয়ে চিন্তা করে না। কিন্তু বাস্তবে ধর্ম কাকে বলে? কেউ কী সত্যিটা বুঝতে পারে? ধর্ম মানুষকে অন্য মানুষের সংগে, সমস্ত সৃষ্টির সংগে একাত্ব হয়ে বাচার জ্ঞান দেয়। সে কারনেই কোন ধর্মস্হানে গিয়ে মানুষ সর্বদাই শান্তি লাভ করে। সেটা কি আপনার অভিজ্ঞতা নয়? অর্থাৎ ধর্ম মানুষের সমস্ত সংর্ঘর্স বিনাশ করে। কিন্তু এটা কি করে সম্ভব যে কোন মানুষের অন্য কারো সংগে সংঘর্স হবে না? বিবেচনা করুন।যেখানে প্রেম আছে, সেখানে কি সংঘর্স থাকে না? আপনি বলবেন হ্যা, অবশ্যই থাকে। কিন্তু আপনি আর একটু ভাবলে দেখবেন যে ক্ষনে সংঘর্স হয়, সে ক্ষনে সমস্ত প্রেম বিনষ্ট হয়। আর তারপরে ইচ্ছা জাগে,অহংকার জাগে,ক্রোধ জাগে, কিন্তু প্রেম। না, প্রেম আার জাগে না। কারন যেখানে প্রেম থাকে সেখানে সমস্ত বিবাদ সমস্ত সংঘর্স বিনষ্ট হয়ে জায়। ঠিক তেমনই প্রেম যদি সমস্ত বিশ্বের জন্য জাগ্রত হয়, সমস্ত সৃষ্টির জন্য জাগ্রত হয়, কেবল মানুষ নয়, পশু- পাখীদের জন্য, ঘাসের কনার জন্য হৃদয়ের কোনো স্নেহ থাকে, তাহলে কি ক্রোধের কোনো কারন থাকে? থাকে না তো? এক ব্যাক্তির অন্য ব্যাক্তির উপর যে প্রণয় থাকে তা যদি সমগ্র সৃষ্টির উপর জাগে তবে তাকে করুনা বলে। করুনা অর্থাৎ সমস্ত সৃষ্টিকে গ্রহন করা। সব কিছুর জন্য কেবল স্নেহ, আর কিছু নয়।কোথাও কারো জন্য কোন হিন ভাব নয়। করুনাই হল বাস্তবে সকল ধর্মের সার। ধর্ম যদি বৃক্ষ হয় তবে করুনাই তার মূল,তার শিকড়। কিন্তু বারবার এমন পরিস্হিতি এমন তৈরি হয় যে মানুষ এই ধর্মের মূলকেই ভুলে যায়। কিছু নিয়ম, কিছু পরম্পরাকে গোড়া ভাবে চেপে ধরে রাখে। আর করুনাকে তো ভুলেই জায়।আর এ জগত ভরে ওঠে সংঘর্সে,ইচ্ছায়,শোষনে,ক্রোধে,বিবাদে, অর্থাৎ অধর্মে।

কর্মযোগী ফলের আশা ত্যাগ করে, কিন্তু কর্মকে ত্যাগ করে না।
সে এই সংসারেই বসাবাস করে, সন্নাসির ন্যায়, সমস্ত কার্য করে, কিন্তু তাতে লিপ্ত হয় না।
কর্মযোগী নিজের সন্তানের থেকে, স্মজনের থেকে, নিজের প্রজাদের থেকে কোনো আকাঙ্খা বা আশা রাখে না।
স্বংয়ং তার সন্নাসের লাভ হয়।
কিন্তু সমাজকে সংসারের ন্যায় লাভ প্রদান করে।


ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ভক্তবৃন্দগন Bhagoban Sri Krishnar Bhakta Brindagon


আমিই সংসার, আমিই সংসারের প্রতিটি কনা,
আমিই সূর্য, আর আমিই চন্দ্র,
আমিই নক্ষত্র, আর আমিই সমগ্রগ্রহরাজী।
আমি সূর্য অপেক্ষাও অধিক পুরাতন, আর বৃক্ষে বিকশিত কুড়ি অপেক্ষাও নুতন।
আমিই সমগ্র মনুষ্যজজাতী, আমিই স্বর্গ এবং নরক ধারন করা শক্তি ।
আমিই দূর্যোধন আর আমিই অর্জুন।
আমার অনেক জন্ম হয়েছে, আমি অনেক অবতাররূপ ধারন করেছি। অনেক প্রকার শরীর ধারন করেছি আমি আর এই মৃত্তিকায় মিশে গেছি। আর আগামীতেও আমি বারংবার জন্ম নেবো।
আমিই অবিনশ্বর পরমাত্মা, আমিই মৎস অবতার, আর আমিই বামন অবতারও, আমিই পরশুরাম, আর আমিই রামচন্দ্র ছিলাম।
আমি ব্রক্ষ্মা, বিষ্ণু আর মহেশ্বর
আর আমিই স্বরস্বতী, কালী আর লক্ষীও।
আমি না পুরুষ, না স্ত্রী, না আমি নপুংসক।
আমি না শরীর, না শরীরের অংশ।
আমি জ্ঞান, আমি সৃষ্টি, চৈতন্য আর পরম ব্রক্ষ্মও আমি ।
আমিই সমস্তকিছু, আর আমি কিছুই নই।
আমিই এই পৃথীবির কোনে কোনে বসবাস করি।
আর এই পৃথীবি, সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্র আর গ্রহরাজী আমারই অন্তস্থলে বাস করে।
আমিই স্বত্ব, আমিই সম্পূর্ণ, আমিই জীব, আর আমিই শিব, অক্ষরে আকার আমি। বেদ মধ্যে সামবেদ, দেবমধ্যে ইন্দ্র, প্রানীর মধ্যে চেতনা, যক্ষমধ্যে কুবের, রুদ্রের মধ্যে শংকর, পর্বতের মধ্যে সুমেরু আর হৃষিদের মধ্যে হ্রিবু, ধ্বনীর মধ্যে ওম কার আমি, যজ্ঞমধ্যে যব, আর বৃক্ষের মধ্যে পবিত্র পিপুল বৃক্ষ, বুদ্ধিতে স্মৃতি, মেধা, ধৃতি আর ক্ষমা আমি। আমিই কৃর্তী। গন্ধর্বমধ্যে চিত্র রথ আমি, দেবর্শীমধ্যে নারদ, আর মুনিদের মধ্যে কুপিল, অশ্বদের মধ্যে উচ্চৈঃশ্রবাঃ, হস্তিমধ্যে ঐরাবত আর পশুদের মধ্যে সিংহ, পক্ষীদের মধ্যে গরুর, মানুষের মধ্যে রাজা, আর অশ্রের মাঝে বর্জ্র আমি। গাভীদের মধ্যে গামধীন, সর্পমধ্যে বাসুকী শেষ নাগ আমি। জমরাজ আমি, বরুনদেব আমি, আর বায়ুও আমি।
ভগবান রাম আমি, পবিএ গঙ্গা আমি, সৃষ্টিমধ্যে আদি, মধ্য, তথা অন্ত আমি।
ব্রক্ষ্মবিদ্যা আমি, মহাকাল আমি আর ব্রক্ষ্মাও।
প্রভা, বিজয়, স্বত্ব আমি, নিশ্চয় আমি, দন্ড, শক্তি, নীতি, মৌনতা তথা তত্বজ্ঞানও আমি।
বাসুদেব আমি, অর্জুন আমি, বেদব্যাস আমি, এরূপ কিছুই নেই জা আমি নই।
এরূপ কোন স্থল নেই যেখানে আমি নেই।
আমিই সময়, আর আমিই জীবন ও মৃত্যু।

বৃক্ষের কিছু পত্র ঝড়ে গেলে বা উৎগামিত না হলে তাকে আনন্দ বা দু:খের কারন বলা জায় না। পত্রের জন্মের উদ্দেশ্য আর তার জীবনের লক্ষ্য কেবল বৃক্ষকে জীবিত রাখার জন্যই হয়। তেমনি মানুষের জন্ম আর জীবনের কারন বাস্তবে সমাজের সুখ। সমাজ সংসারের জন্য, আর এই সমগ্র সংসার সৃষ্টির জন্য আর এই সমগ্র সৃষ্টি কেবল পরমাত্মার জন্য। জে এই সত্যকে অনুধাবন করে তার নিকট ধর্মের মার্গ স্পষ্ট বিদ্যমান।

ভগবান শ্রী কৃষ্ণের অমৃত বানী

মোহ অপরকে বাধার চেষ্টা করে থাকে
আর প্রেম সংয়কে অপরের সাথে বেধে রাখে।
আর তপস্যিদের ও তো প্রেম করার অধিকার আছে।
সমগ্র জীবন আপনি বন্ধনের পীরাই ভোগ করেছেন মাত্র, এবার জীবিত থেকে মুক্তির আনন্দ নেবার সুযোগ রয়েছে আপনার কাছে।





নিষ্কাম কর্ম কি এবং নিষ্কাম কর্মের তাৎপর্য :
ফলের আসায় কামনা প্রকট হয়, আর কামনার তো স্বভাবই হলো অসুন্তুষ্ট থাকা, অসোন্তস থেকে ক্রোধ উৎপন্ন হয়ে থাকে, আর ক্রোধ থেকে মোহ জন্ম নেয়। মোহের দ্বরুন ব্যাক্তি আচার ও ব্যাবহারের জ্ঞানই ভুলে জায়, জ্ঞান ভুলে গেলে বুদ্ধি চলে জায়, অনুচিত প্রকারের কার্য করতেই থাকে, আর সমাজ এরূপ ব্যাক্তির শত্রু হয়ে পরে।
আর অন্তীমে এরূপ ব্যাক্তির পূর্নতার পতন ঘটে।
এই কারনেই সংসারে পাপ আর অধর্ম বৃদ্ধি পায়।
কিন্তু কর্মযোগ এই বিচিত্র পরিস্থিতে সমগ্র সংসারকে রক্ষা করে।
কর্মযোগী ফলের আসা ত্যাগ করে কিন্তু কর্মকে ত্যাগ করে না। সে এই সংসারেই বসবাস করে। সন্ন্যাসীর ন্যায়। সমস্ত কার্য করে কিন্তু তাতে লিপ্ত হয় না। কর্মযোগী নিজের সন্তানের থেকে, স্বজনের থেকে, নিজের প্রজার থেকে কোন আশা বা আকাংঙ্খা রাখে না। স্বয়ং তার সন্ন্যাস এর লাভ হয়। কিন্তু সমাজকে সংসারীর ন্যায় লাভ প্রদান করে।
জদি গভীরভাবে চিন্তা করো তবে শিঘ্রই জেনে জাবে জে জীবনে এমন কোন কার্যই নেই জার সাথে আশা বা আকাংখা যুক্ত করা অনিবার্য।
যখন সৃষ্টিই পরমাত্মা, আর মানুষ সেই পরমাত্মারই অংশ তখন সমস্ত কার্য পরমাত্মাই করেন। মানুষ স্বয়ং কিছু করে না। এটিই কর্মযোগের মুল সিদ্ধান্ত।
৩টি গুন ত্যাগ করে নির্গুন হয়ে জাও।এই দ্ন্দ থেকে মুক্ত হয়ে জাও।সর্বদা সত্য অর্থাৎ পরমাত্মায় বুদ্ধি নির্বাহ করে কর্তব্য করতে থাকো।
কিছু প্রাপ্তি লাভের আশা আর কিছু প্রাপ্ত বস্তুকে সংরক্ষন করার চিন্তা পরিত্যাগ করো। আর নিজের আত্মাকে সতন্ত্র করো।
স্বরন রেখো তোমার অধিকার তো কেবল মাত্র কর্ম করার জন্যে, ফল তো ঈশ্বরের হস্তে। এ কারনে না তো কর্ম থেকে পলায়ন করা উচিৎ না তো কর্মফলের আশা করা উচিৎ।

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী

অজ্ঞানতা আপনার দোষ।
আপনি তো ধর্মের বাস্তবিক রূপ জানার সম্যক প্রচেষ্টাই করেন নি কখনও। করুনার ছত্রতলে যতক্ষন সমগ্র সংসার আাশ্রয় গ্রহন না করে ততখন সমাজে ধর্ম অসুম্পূর্ণ থাকে।
কিন্তু আপনি তো সারাজীবন নিজের পরিবারের কথাই ভেবেছেন। সংসারের কল্যান এর জন্য তো চিন্তাই করেন নি আপনি।
এই হেতু আপনার ত্যাগও স্বার্থেরই আরেক রূপ মাত্র।।
ভেবে দেখুন আপনি নিজের সুখ শান্তিকে ধর্ম জ্ঞানন করলেন। যদি তাই বাস্তবিক ধর্ম হয় তবে এই মহাযুদ্ধই বা কেন হচ্ছে? বাস্তবে ধর্ম কোন মৃতচিন্তার নাম নয়, না তো কোন এক ঐতিহ্যের নাম মাত্র।
ধর্ম তো জীবনের নাম। আর জীবন নিরন্তর পরিবর্তনশীল। পরিবর্তনই তো জীবনের কূল।
আর পরিবর্তন হেতু মানুষকে কর্ম করে যেতে হয়।
আর আপনি কর্মকেই ত্যাগ করলেন?


যে স্বাদ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আহারকেই ত্যাগ করে বাস্তবে তার মন থেকে স্বাদের লালসা কখনোই জায় না।
তার দুপ্রকারের হানি হয়।
প্রথমত সে দুর্বল হয়ে পরে। জার কারনে পরমাত্মাকে প্রাপ্ত করার জন্য যে প্রচেষ্টা অনিবার্য তা সে করতে সক্ষম হয় না।
আর দ্বীতিয়ত : সর্বদাই তার মন স্বাদ গ্রহনের লালশায় পূর্ণ থাকে।
এই হেতু আহার ত্যাগের চাইতে উত্তম কার্য
স্বাদ গ্রহনের লালশাকেই ত্যাগ করে ফেলা।
কর্মযোগী নিজের মনের সমস্ত লালশাকে নিষ্কাশন করে, জীবনকে কর্তব্য মনে করে কার্য অব্যশই করে, সেই কার্যে আবদ্ধ হয় না।
অর্থাৎ যে ব্যাক্তি নিজের কার্য থেকে আশা বা আকাঙ্খা রাখে না তারই কার্য পূর্ণ হয়।

জয় শ্রী রাধা গোবিন্দ (JOY SREE RADHA GOVINDO)


ভয় কী?
মানুষের জীবনে ভয়ের বসত করে সদাই, কখনও সম্পত্তি নাশের ভয়/কখনও অপমানের ভয়/কখনও আপন জনের সাথে বিচ্ছেদ এর ভয়। এ কারনেই ভয়ের অস্তিত্ব সবার একই রকম মনে হয়। কখনও কি বিবেচনা করেছেন - যে কোনো পরিস্তিতি বা বস্তু ভয়ের জন্ম দেয়।তার থেকে বাস্তবে দুখ তৈরি হয়? না এমন কোন নিয়ম নেই, আর সবার অভিজ্ঞতা তো এই বলে - ভয় ধারন করলেই ভবিষ্যতের দুখের নিবারন কমে। ভয় কেবল আগামি দুখে:র কল্পনা মাএ।বাস্তবের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। ভয় আর কিছু নয়, কেবল কল্পনা মাএ।ভয় থেকে মুক্তি পাওয়া কি খুব কঠিন কাজ? অবশ্যই বিচার করে দেখুন।



পূর্ব পুরুষদের ইচ্ছা, আশা, মহৎ আকাংখা ক্রোধ, বিবাধ, প্রতিশোধ এ সব কিছুর ভার নতুন প্রজন্মকে বহন করতে হয়।
মাতা-পিতা নিজের সন্তানকে দিতে তো চান বিশ্বের সমস্ত সুখ, কিন্তু দিয়ে ফেলেন নিজের জমানো পীরার সত্তা।
দিতে চান অমৃত, কিন্তু সাথে সাথে বিষের ঘড়াও পূর্ণ করে দিয়ে জান।
আপনি বিচার করুন আপনি আপনার সন্তানকে কি দিয়েছেন জীবনে?
অবশ্যই প্রেম, জ্ঞান, সম্পত্তি এসব দিয়ে থাকবেন।
কিন্তু তার সাথে সাথে ওদের মনকে বিষে দেননি তো?
পূর্বশর্ত দিয়ে ভালমন্দের পূর্ব পরিকল্পিত ব্যাখা দেন নি তো?
ব্যাক্তির সাথে ব্যাক্তির, সমাজের সাথে সমাজের
রাষ্ট্রের সাথে রাষ্ট্রের এ সংঘর্স পূর্ব ব্যাখার থেকে নির্মিত নয় কি?
হত্যা, মৃত্যু, রক্তপাত, এসব কি পূর্বব্যাখা থেকে জন্মায় না?
অর্থাৎ মাতা-পিতা নিজের সন্তানকে জন্মের সাথে সাথে মৃত্যুর দান ও দেন।
প্রেমের প্রকাশের সাথে ঘৃনার অন্ধকার ও উপহার দেন আর
অন্ধকার মনের হোক, হৃদয়ের হোক বা বাস্তবিক হোক, তার থেকে কেবল ভয়ের উৎপত্তি হয়।
কেবল ভয়।
স্বয়ং বিচার করুন।

ভগবান শ্রী কৃষ্ণ, আমার প্রানশ্রী কৃষ্ণের ভক্ত সংঘ

স্বত্ব গুনের সম্পত্তি কাকে বলা হয়?
বিনা কারনে তথা স্বার্থের হেতু হিংসা করা অধর্ম।
বাস্তবে অহিংসাই পরম ধর্ম। আর তার সাথে সত্য, ক্রোধ না করা, ত্যাগ, মনের শান্তি, নিন্দা না করা, দয়া ভাব, সুখের প্রতি আকর্শিত না হওয়া, বিনা কারনে কোন কার্য না করা, তেজ, ক্ষমা, ধৈর্য্য, শরীরের শুদ্ধতা, ধর্মের বিরোধিতা না করা তথা অহংকার না করা
এই সব গুনকে স্বত্বগুনের সম্পত্তি বা দৈবিক সম্পত্তি বলা হয়।
এর দ্বারাই মানুষ পরমাত্মার অর্থাৎ আমার ভক্তি করতে সক্ষম হয়।
জীবনের কর্তব্যকে বহন করে চলে, ধর্মের স্হাপনা করে চলে, আর কর্মফলের আশা পরিত্যাগ করে জীবন-জাপন করে,
তাকে আমি নিঃসন্দেহে এই জন্মেই সন্তোষ প্রদান করি আর মৃত্যুর পশ্চাতে নিজেরই হৃদয়ে স্হান দিয়ে থাকি।


ভবিষ্যতের দ্বীতিয় নাম সংঘর্স। হৃদয়ে আজ যদি কোন ইচ্ছা জাগে, যদি তা পূর্ণ না হয় তবে হৃদয় ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করে।
ভবিষ্যতে ইচ্ছা পূর্ণ হবে এমন কল্পনা করতে থাকে।
কিন্তু জীবন? জীবন না লুকিয়ে আছে ভবিষ্যতে না অতীতে। জীবনের হদিস তো আছে এই ক্ষনে।
অর্থাৎ এই মুহুর্তের অনুভবেই রয়েছে জীবনের অনুভব।
কিন্তু আমরা সব জেনে বুঝেও এটুকু সত্য মেনে নিতে পারি না।
হয় আমরা পুরোনো স্মৃতি দিয়ে নিজেদের ঘিরে বসে থাকি অথবা আগামী সময়ের জন্য পরিকল্পনা করতে থাকি।
আর জীবন? জীবন বয়ে চলে।
এই সত্য যদি আমরা হৃদয়ে গেথে নেই যে না আমরা ভবিষ্যৎ দেখতে পাই, না আমরা ভবিষ্যৎ নির্মান করতে পারি।
আমরা তো কেবল ধৈর্য আর সাহসের সাথে ভবিষ্যৎকে আলিঙ্গন করতে পারি।
স্বাগত জানাতে পারি ভবিষ্যৎকে।
আর তবেই কি জীবনের প্রতি মুহুর্ত জীবনের দ্বারা মুখোরিত হয়ে উঠবে না?
স্বয়ং বিচার করুণ।

গীতার কথা,শাস্ত্র কথা এবং অমৃত বানী


কখনও কখনও কোন ঘটনা মানুষের জীবনের সকল পরিকল্পনা ভেঙ্গে দেয়। আর মানুষ সেই আঘাতকেই জীবনের কেন্দ্র বানিয়ে নেয়।
কিন্তু ভবিষ্যৎ কি মানুষের পরিকল্পনার আধারে নির্মিত হয়?
না। যেভাবে কোন উচু পর্বতে যে ব্যাক্তি সর্বপ্রথম চড়ে সেই পর্বতের পাদদেশে বসে সে জা পরিকল্পনা করে সেই পরিকল্পনাই কি তাকে পর্বতের শিখরে পৌছে দিতে পারে ?
না, বাস্তবে সে ব্যাক্তি যত উপরে ওঠে তত নিত্যনতুন পরীক্ষা নতুন বিরম্বনা নতুন ধরনের অবরোধের সম্মুখীন হয়।
প্রত্যেক পদে তার পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে হয়। প্রত্যেক পদে তাকে পরিকল্পনা বদলাতে হয়।
না হলে যদি পুরাতন পরিকল্পনা তাকে ক্ষাদের দিকে ঠেলে দেয়।
সে পর্বতকে নিজের যোগ্য গড়ে তুলতে পারে না।
কেবল নিজেকে পর্বতের জোগ্য তৈরি করার চেষ্টা করতে পারে।
আচ্ছা জীবনের ক্ষেত্রে তো এমনি হয়, তাই না?
যখন মানুষ তার কোন একটি ক্ষেত্রে বাঁধা, কোন একটি অবরোধকে জীবনের কেন্দ্র বানিয়ে নেয়, নিজের জীবনের গতিই থামিয়ে দেয়, তখন সে তার জীবনে সফল হতে পারে না। পারে না সুখ আর শান্তি প্রাপ্ত করতে।
অর্থাৎ জীবনকে নিজের যোগ্য করে তোলার বদলে স্বয়ং নিজেকে জীবনের যোগ্য গড়ে তোলই কি সাফল্য আর সুখের একমাত্র মার্গ নয়?
স্বয়ং বিচার করুন।


সন্তানদের ভবিষ্যৎ সুখে ভরিয়ে তোলার চেষ্টা। এই তো প্রত্যেক মাতা-পিতার প্রথম কর্তব্য।
যাদের আপনি এই সংসারে এনেছেন, যাদের কর্মের দ্বারা আপনারও পরিচয় পাবে ভবিষ্যতে।
তাদের ভবিষ্যৎ সুখদায়ককরার চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ আর কিইবা হতে পারে?
কিন্তু সুখ আর সুরক্ষা এসব কি মানুষের কর্ম থেকেই প্রাপ্ত হয় না?
মাতা-পিতার দেয়া ভাল বা মন্দ সংস্কার বা তাদের দেয়া যোগ্য অথবা অযোগ্য শিক্ষা এ সবই কি আজকের সমস্ত কর্মের মূল নয়?
সংস্কার আর শিক্ষা থেকে তৈরি হয় মানুষের চরিত্র।
অর্থাৎ মাতা-পিতা যেমন তার সন্তানদের চরিত্র নির্মান করেন তেমনই হয় তার ভবিষ্যৎ।
কিন্তু তবুও অধিকতর মাতাপিতা নিজেদের সন্তানের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার চিন্তায় তাদের চরিত্র নির্মানের কার্যের কথা ভুলেই জান।
বস্তুত যে মাতাপিতা কেবল নিজের সন্তানদের ভবিষ্যতের চিন্তা করেন তাদের সন্তানদের কোন লাভ হয় না।
কিন্তু যে মাতাপিতা নিজের সন্তানের ভবিষ্যৎ নয়
তার চরিত্রের নির্মান করেন সেই সন্তানের প্রশস্তি বিশ্বসংসার করে।
স্বয়ং বিচার করুন।


ইচ্ছা,আশা,প্রত্যাশা, আকাংক্ষা এ সবই তো মানব সমাজের চালিকাশক্তি।
তাই না?
জদি কেউ আপনাকে প্রশ্ন করে জে আপনি কে?
তবে আপনার উত্তর কি হবে?
বিবেচনা করুন।
আপনি তখন বুঝতে পারবেন যে আপনার ইচ্ছাই আপনার জীবনের ব্যাখ্যা। কিছু পাওয়ার সাফল্য, কিছু না পাওয়ার নিষ্ফলতাই আপনার পরিচয়।
অধিকতর ব্যাক্তি এইভাবেই জীবিত - নিজের ভিতর থেকে শেষ হতে থাকে কিন্তু নিজের ইচ্ছেগুলোকে মারতে পারে না। ইচ্ছা তাকে এমনভাবে ছোটাতে থাকে যেমন মৃগের নেশায় শীকারি।
কিন্তু আবার এই ইচ্ছাগুলির গর্ভ থেকেই আবার জ্ঞানের প্রকাশ ও ঘটে।
কি করে?
যখন ইচ্ছা অপূর্ণ থেকে জায়, আশা ভেঙে জায়
তখন ঠিক সেখান থেকেই জ্ঞানের কিরন প্রবেশ করে মানুষের হ্রদয়ে।
না এ গাথা কেবল ইচ্ছাদের পরস্পর সংঘর্শের নয়
নয় মহৎআকাংখা থেকে জন্ম নেওয়া ভয়াবহ রক্তপাতের।
এ গাথা হল ইচ্ছার গর্ভ থেকে উৎসারিত হওয়া জ্ঞানের।


যদা যদা হি ধর্মস্য
গ্লানিভাবর্তি ভারত ॥
অভ্যথানমধর্মস্য তদাত্তানং স্রিজাম্যহম
পরিত্তরাণায় সাধূনাং বিনাশায় চ
দুষ্ক্রিতম ।
ধর্মসংস্থাপনার্থায়
সম্ভাবমি যুগে যুগে ॥
বাংলা অনুবাদ-
পৃথিবীতে যখনি ধর্মের গ্লানি হয়
এবং পাপ বৃদ্ধি পায়,তখনি
আমি শরীর ধারন
করে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হই।
আমি যুগে যুগে অবতীর্ণ
হয়ে সাধুদিগের পরিত্রাণ,পাপীদের
বিনাশ এবং ধর্ম সংস্থাপন করি।



মৃত্যুর পশ্চাতে দেহকে নষ্ট করা হয় কেন?
বাস্তবে না মানুষের পরিচয় দেহের সাথে যুক্ত থাকে
না তো সম্পর্কের ভিত্তি তার দেহের সাথে থাকে।
মানুষের স্বভাব, তার আচরণ আর তার কার্যই তার আসল পরিচয়।
এই স্বভাব,আচরণ আর কিরূপে তৈরি হয় তাকে বোঝ।
মানুষের জীবন কেবল দৃশ্যমান আর অদৃশ্যমান পদার্থের মিলন মাত্র।
কিন্তু তথাপি প্রতেক মানুষের স্বভাব তথা কার্য ভিন্ন ভিন্ন প্রতিপন্ন হয়।
এর কারন হল সৃষ্টির ৩ গুন - তম, রজ আর সত্য।
তম শব্দের অর্থ অন্ধকার। ভাল মন্দ বিচার ব্যাতিত জীবন নির্বাহকরাকে তামসিক আচরণ বলা হয়ে থাকে। যেমন রূপে পশুপাখি বেচে থাকে কেবল মাত্র শারিরীক ইচ্ছাকে পূর্ণ করার জন্য।
সত্য শব্দের অর্থ জ্ঞানের প্রকাশ। যখন ব্যাক্তি প্রতিটি পরিস্হিতে ধর্মের, সত্যের আর পরম্পরার বিচার করে ব্যাবহার করে থাকে তখন তাকে স্বাত্বিক জীবন বলা হয়।
এই দুয়ের অন্তস্হলেও এক প্রকারের ব্যাক্তি থাকে
যার নিকট জ্ঞান তো আছে কিন্তু শ্বরীর আর মনের বাসনার সাথে আবদ্ধ ও রয়েছে। এরূপ ব্যাক্তি রজগুন অর্থাৎ অহংকারপূর্ন মন নিয়ে বেচে থাকে।
তম,রজ অথবা সত্য গুনের অধিক অথবা সল্পমাত্রার মিল বন্ধনে মানুষের স্ববাভ তৈরি হয়।



সমাজে সর্বদাই স্ত্রী-লোকদের সাথে অন্যায় হয় !!!
মানব সমাজ স্ত্রী-লোককে সর্বদা শোষন, অন্যায় আর অপমান দিয়েছে।
আপনারা নিজেদের আশেপাশে দেখুন, সমগ্র ইতিহাসকে দেখুন এই একই রূপ দেখা যাবে যে পুরুষের ঈর্শা,অহংকার,বৈরিতা,লালসা, এই সব কুচিন্তার পরিনাম স্ত্রী-লোকই ভোগ করে।
যুদ্ধ পুরুষ করে আর পরাজিত নগরে স্ত্রী-লোকের সাথে বলাৎকার করা হয়।
পুরুষ মদ্যপান ও দূতক্রীয়ায় নিজের সম্পত্তি হারায়, আর স্ত্রী-লোকদের ভাগ্যে নেমে আসে ক্ষুধা।
পুরুষের অহংকার ক্ষুন্ন হয় আর স্ত্রী-লোকের স্বাধীনতা ও সুখে বাঁধা উৎপন্ন হয়ে যায়।
পুরুষ জীবনে পরাজিত হয়ে পরিবারকে ত্যাগ করে আর স্ত্রী নিজের সন্তানদের ক্ষুধা নিবারনের
তারনে সংষর্স করতে থাকে।
সমগ্র সংসারের দুঃখের হিসাব করুন স্পষ্ট দেখতে পাবেন যে পুরুষের তুলনায় স্ত্রী-লোক অধিকতর দুঃখ ভোগ করে।
এ কোন প্রকারের সমাজ রচনা করেছি আমরা ?
যেখানে মনুষ্যজাতীর অর্ধেক ভাগ অপর অর্ধেক ভাগকে নিরন্তর পদদলিত করছে। আর সেই পদদলিত স্ত্রী-লোক মানুষের ভবিষ্যতের জন্মদায়িনী?
সৃষ্টিকে দেখুন। নতুন বৃক্ষকে জন্মদানকারী বীজের আসপাশে ঈশ্বর ফুলের পাপরী নির্মান করেছেন।
তাকে রং ও সুগন্ধ দিয়ে ভরে দিয়েছেন। যেখানে ভবিষ্যৎের জন্ম হয় সেখানে তো কেবল মাত্র সৌন্দর্য, কেবল সুখ সন্তোষ ও সম্মান হওয়া আবশ্যক নয় কি?
কিন্তু সমাজ স্ত্রী-লোককে দুঃখ দিয়ে সমস্ত ভবিষ্যৎকে দুঃখ দ্বারা পূর্ণ করতে থাকে।
প্রহার, শোষন,পীরা এই সবে ঝলসে যাওয়া স্ত্রী-লোক স্বাস্থবান সুখী সনতানের জন্ম কোন প্রকারে
দেবে?
অর্থাৎ যে যে সময় কোন স্ত্রী-লোকের অপমান হয়, কোন স্ত্রী-লোক এর উপর শোষন হয়, কোন নারীর কেশ আকর্ষন করা হয় সেই সেই সময় কোন না কোন রুপে এক যুদ্ধের জন্ম হয়। কোন না কোনভাবে মহাভারতের আরম্ভ হয়।
স্বয়ং বিচার করুন ।
বারংবার বিচার করুন ।।


ধর্মসংকট কি ?
প্রতেকটা মানুষের জীবনে এমন একটা সময় অবশ্যই আসে যখন তার সমস্ত আশা, সমস্ত সপ্ন, সমস্ত ভরসা চুর্ণ হয়ে জায়। জীবনের সমস্ত আয়োজনই ছএাক্ষান হয়ে জায়। একদিকে ধর্মের পথ থাকে আর অন্যদিকে থাকে সুখ। একেই তো ধর্মসংকট বলে। তখন ধর্ম পালন করা সংকটপূর্ন হয়ে ওঠে ও ধর্ম ত্যাগই সুখকর হয়।
বিবেচনা করুন - কখনও আপনজনদের বিরুদ্ধে তিক্ত সত্য বলা প্রোয়জন হয়ে পরে।
কখনও ভীষন দারিদ্রাবস্তায় সহজেই চোর্জবৃদ্ধির পথ সম্মুখে আসে।
কখনও কোন শক্তিশালী রাজনেতা অথবা রাজার কর্মচারীর করা অধর্ম পথ রোধ করে। সকলের জীবনে এমন ঘটনা ঘটতেই থাকে।
অধিকতরব্যাক্তি এমন মুহুর্তগুলোকে ধর্মসংকট রূপে ধার্যই করে না। তারা কোনরকম অন্তরদন্দ অনুভবই করে না। সাধারন বুদ্ধিতে সুখের পথে পা বাড়িয়ে ফেলে যেমন মৌমাছি মধুর দিকে চলে জায়।
বাস্তবে ধর্মসংকটের মুহুর্ত ঈশ্বরের আরও কাছে পৌছনোর ক্ষন। জদি আমরা সংঘর্সকে ভয় না করি, সুখের দিকে আকৃষ্ট না হই, নিজের ধর্মের পথে দৃড় থাকি তবে ঈশ্বরের সাথে সাক্ষাত কঠিন নয়।
পবনের সংগে লরাই করে যে পাতা বৃক্ষ থেকে খসে পরে সে ও তো আকাশের দিকে ওরে। পবনে নুয়ে জায় তৃণ, তারা ভুমিতেই পরে থাকে।
অর্থাৎ ধর্মসংকট থেকে আমরা জদি সংকটকেই এরিয়ে জাই তবে সুখ লাভ হয় ঠিকই, আয়ু বৃদ্ধি পায় কিন্তু চরিএের ক্ষয় হয় না কি? আত্মা দরিদ্র হয়ে জায় না কি? আর ঈশ্বর এর থেকে আমরা দূরে সরে জাই না কি?
স্বয়ং বিচার করুন।



ভয় কী?
মানুষের জীবনে ভয়ের বসত করে সদাই, কখনও সম্পত্তি নাশের ভয়/কখনও অপমানের ভয়/কখনও আপন জনের সাথে বিচ্ছেদ এর ভয়। এ কারনেই ভয়ের অস্তিত্ব সবার একই রকম মনে হয়। কখনও কি বিবেচনা করেছেন - যে কোনো পরিস্তিতি বা বস্তু ভয়ের জন্ম দেয়।তার থেকে বাস্তবে দুখ তৈরি হয়? না এমন কোন নিয়ম নেই, আর সবার অভিজ্ঞতা তো এই বলে - ভয় ধারন করলেই ভবিষ্যতের দুখের নিবারন কমে। ভয় কেবল আগামি দুখে:র কল্পনা মাএ।বাস্তবের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। ভয় আর কিছু নয়, কেবল কল্পনা মাএ।ভয় থেকে মুক্তি পাওয়া কি খুব কঠিন কাজ? অবশ্যই বিচার করে দেখুন।

নিষ্কাম কর্ম কি এবং নিষ্কাম কর্মের তাৎপর্য :
ফলের আসায় কামনা প্রকট হয়, আর কামনার তো স্বভাবই হলো অসুন্তুষ্ট থাকা, অসোন্তস থেকে ক্রোধ উৎপন্ন হয়ে থাকে, আর ক্রোধ থেকে মোহ জন্ম নেয়। মোহের দ্বরুন ব্যাক্তি আচার ও ব্যাবহারের জ্ঞানই ভুলে জায়, জ্ঞান ভুলে গেলে বুদ্ধি চলে জায়, অনুচিত প্রকারের কার্য করতেই থাকে, আর সমাজ এরূপ ব্যাক্তির শত্রু হয়ে পরে।
আর অন্তীমে এরূপ ব্যাক্তির পূর্নতার পতন ঘটে।
এই কারনেই সংসারে পাপ আর অধর্ম বৃদ্ধি পায়।
কিন্তু কর্মযোগ এই বিচিত্র পরিস্থিতে সমগ্র সংসারকে রক্ষা করে।
কর্মযোগী ফলের আসা ত্যাগ করে কিন্তু কর্মকে ত্যাগ করে না। সে এই সংসারেই বসবাস করে। সন্ন্যাসীর ন্যায়। সমস্ত কার্য করে কিন্তু তাতে লিপ্ত হয় না। কর্মযোগী নিজের সন্তানের থেকে, স্বজনের থেকে, নিজের প্রজার থেকে কোন আশা বা আকাংঙ্খা রাখে না। স্বয়ং তার সন্ন্যাস এর লাভ হয়। কিন্তু সমাজকে সংসারীর ন্যায় লাভ প্রদান করে।
জদি গভীরভাবে চিন্তা করো তবে শিঘ্রই জেনে জাবে জে জীবনে এমন কোন কার্যই নেই জার সাথে আশা বা আকাংখা যুক্ত করা অনিবার্য।
যখন সৃষ্টিই পরমাত্মা, আর মানুষ সেই পরমাত্মারই অংশ তখন সমস্ত কার্য পরমাত্মাই করেন। মানুষ স্বয়ং কিছু করে না। এটিই কর্মযোগের মুল সিদ্ধান্ত।
৩টি গুন ত্যাগ করে নির্গুন হয়ে জাও।এই দ্ন্দ থেকে মুক্ত হয়ে জাও।সর্বদা সত্য অর্থাৎ পরমাত্মায় বুদ্ধি নির্বাহ করে কর্তব্য করতে থাকো।
কিছু প্রাপ্তি লাভের আশা আর কিছু প্রাপ্ত বস্তুকে সংরক্ষন করার চিন্তা পরিত্যাগ করো। আর নিজের আত্মাকে সতন্ত্র করো।
স্বরন রেখো তোমার অধিকার তো কেবল মাত্র ক

র্মমৃত্যুর পশ্চাতে দেহকে নষ্ট করা হয় কেন?
বাস্তবে না মানুষের পরিচয় দেহের সাথে যুক্ত থাকে
না তো সম্পর্কের ভিত্তি তার দেহের সাথে থাকে।
মানুষের স্বভাব, তার আচরণ আর তার কার্যই তার আসল পরিচয়।
এই স্বভাব,আচরণ আর কিরূপে তৈরি হয় তাকে বোঝ।
মানুষের জীবন কেবল দৃশ্যমান আর অদৃশ্যমান পদার্থের মিলন মাত্র।
কিন্তু তথাপি প্রতেক মানুষের স্বভাব তথা কার্য ভিন্ন ভিন্ন প্রতিপন্ন হয়।
এর কারন হল সৃষ্টির ৩ গুন - তম, রজ আর সত্য।
তম শব্দের অর্থ অন্ধকার। ভাল মন্দ বিচার ব্যাতিত জীবন নির্বাহকরাকে তামসিক আচরণ বলা হয়ে থাকে। যেমন রূপে পশুপাখি বেচে থাকে কেবল মাত্র শারিরীক ইচ্ছাকে পূর্ণ করার জন্য।
সত্য শব্দের অর্থ জ্ঞানের প্রকাশ। যখন ব্যাক্তি প্রতিটি পরিস্হিতে ধর্মের, সত্যের আর পরম্পরার বিচার করে ব্যাবহার করে থাকে তখন তাকে স্বাত্বিক জীবন বলা হয়।
এই দুয়ের অন্তস্হলেও এক প্রকারের ব্যাক্তি থাকে
যার নিকট জ্ঞান তো আছে কিন্তু শ্বরীর আর মনের বাসনার সাথে আবদ্ধ ও রয়েছে। এরূপ ব্যাক্তি রজগুন অর্থাৎ অহংকারপূর্ন মন নিয়ে বেচে থাকে।
তম,রজ





সত্য গুনের অধিক অথবা সল্পমাত্রার মিল বন্ধনে মানুষের স্ববাভ তৈরি হয়। করার জন্যে, ফল তো ঈশ্বরের হস্তে। এ কারনে না তো কর্ম থেকে পলায়ন করা উচিৎ না তো কর্মফলের আশা করা উচিৎ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

buttons=(Accept !) days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !
To Top